Ad Code

Responsive Advertisement

Ticker

6/recent/ticker-posts

শান্তির পক্ষেই বার্তা চীনের: উত্তেজনার মাঝে আন্তর্জাতিক ভারসাম্যের পাঠ

শান্তির পক্ষেই বার্তা চীনের: উত্তেজনার মাঝে আন্তর্জাতিক ভারসাম্যের পাঠ


নিজস্ব প্রতিবেদন | ৮ মে ২০২৫


ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে যুদ্ধের সম্ভাবনা যেন ঘনিয়ে এসেছে। সীমান্তে পাল্টাপাল্টি অভিযানে দুই দেশ যখন উত্তপ্ত, তখন এই জটিল পরিস্থিতিতে একমাত্র পরাশক্তি হিসেবে চীন যে সুরে কথা বলেছে, তা বিশেষভাবে গুরুত্ব পেতে বাধ্য।


চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রকের মুখপাত্র লিন জিয়ান স্পষ্ট ভাষায় জানিয়েছেন:

**"ভারত ও পাকিস্তানের শান্তি স্থাপন ও সংযম প্রদর্শনের চেষ্টা করা উচিত। আমরা সব ধরনের সন্ত্রাসবাদের বিরোধিতা করি এবং শান্তি ও স্থিতিশীলতার পক্ষেই রয়েছি।"**


# চীনের এই অবস্থান শুধু প্রতীকী নয়, বাস্তবভিত্তিক


চীন, পাকিস্তানের দীর্ঘদিনের কৌশলগত মিত্র হলেও, বর্তমান উত্তেজনার প্রেক্ষিতে একতরফা সমর্থনের বদলে **"শান্তি ও স্থিতিশীলতার"** বার্তা দিয়েছে। এটি চীনের একটি কৌশলী কূটনৈতিক অবস্থান। কারণ:


* **CPEC ও অর্থনৈতিক স্বার্থ**: পাকিস্তানের বেলুচিস্তান থেকে শুরু করে পাক অধিকৃত কাশ্মীর পর্যন্ত বিস্তৃত চীন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডোর (CPEC) বর্তমানে ভারতের আক্রমণের পরিধিতে রয়েছে। এখানে সংঘাত বাড়লে প্রকল্পটি মারাত্মক ক্ষতির মুখে পড়তে পারে।


* **আঞ্চলিক ভারসাম্য রক্ষা**: দক্ষিণ এশিয়ায় চীন তার প্রভাব বজায় রাখতে চায়। যুদ্ধ পরিস্থিতি সৃষ্টি হলে ভারতের সঙ্গে সরাসরি উত্তেজনা তৈরি হোক, তা চায় না চীন। বরং তারা মধ্যস্থতাকারী ও দায়িত্বশীল শক্তি হিসেবে বিশ্বদরবারে পরিচিত হতে চায়।


* **চীনের ‘নমনীয় শক্তি’ কৌশল**: সামরিক চাপ নয়, বরং কূটনৈতিক প্রভাব ও অর্থনৈতিক লেনদেনের মাধ্যমে আঞ্চলিক নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখার যে নীতিতে চীন বিশ্বাস করে, এই বিবৃতিও সেই নীতিরই ধারাবাহিকতা।


#আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপটে শান্তির ভাষা


চীন এই মুহূর্তে বিশ্বমঞ্চে ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ, তাইওয়ান ইস্যু, মার্কিন নিষেধাজ্ঞা ইত্যাদি নানা চাপে রয়েছে। একাধিক ফ্রন্টে চাপের মুখে থাকা চীন দক্ষিণ এশিয়ায় আরেকটি যুদ্ধ পরিস্থিতি দেখতে চায় না। তাই তারা এই অঞ্চলে "স্থিতিশীল পরিবেশ" বজায় রাখার পক্ষে সাফ বার্তা দিচ্ছে।


এখন প্রশ্ন—এই বার্তা কি কার্যকর হবে?


### ভারত-পাকিস্তানের কাছে বার্তাটি কেমন?


ভারতের দৃষ্টিকোণ থেকে, চীনের এই নিরপেক্ষ ভাষা কূটনৈতিকভাবে ইতিবাচক ইঙ্গিত হতে পারে। যদিও চীন সরাসরি ভারতের পক্ষে কিছু বলেনি, তবে পাকিস্তানকেও সরাসরি সমর্থন করেনি।

পাকিস্তানের জন্য এটি কিছুটা চাপে ফেলতে পারে, কারণ চীন যদি সহানুভূতির বদলে সংযমের ভাষা ব্যবহার করে, তবে সামরিকভাবে চড়া সুরে জবাব দেওয়া পাকিস্তানের পক্ষে কঠিন হয়ে উঠতে পারে।


উপসংহার

চীনের বক্তব্য আন্তর্জাতিক কূটনীতির একটি গুরুত্বপূর্ণ পাঠ:

যুদ্ধের সময়ও শান্তির ভাষা প্রয়োজন।"**


ভারত-পাকিস্তান সীমান্ত উত্তেজনার এই মুহূর্তে, চীনের শান্তি বার্তা হয়তো যুদ্ধ থামাবে না, তবে তা আগুনে জল ঢালার কাজ করতে পারে।

 এখন সময়—গোলাবারুদের নয়, সংলাপের।

তথ্য সূত্রের...

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ