নেহা কর্মকার
তোমায় দেখার মূহুর্তরা থমকে যেত না হয়..
তোমার চোখের দিকে চেয়ে কেটেই যেত না হয় একটা আস্ত মন ভার করা সন্ধ্যেবেলা..
তুমি কাছে আসলেই অকারণে ঘনাত নিম্মচাপ।
বইত মেঘলা, ঝিরঝিরে হাওয়া, তারপর একটা ঝমঝমিয়ে বৃষ্টি, তোমার হাতে হাত রেখে হেঁটে যাওয়া বৃষ্টি ধোয়া বিকেল কিংবা দমকা হাওয়ায় উড়ে যাওয়া ছাতা..
এমনটা কেন হয় না?
এই বাহ্যিক দুনিয়ায় আমার মন লাগে না, তাইতো তোমায় দেখি।তোমায় দেখার বাহানায় একটু একটু করে সাজিয়ে নিয়ে আমার মনে নরম জমি, সেখানে অযত্নে পড়ে থাকে ছোট্ট ছোট্ট ফুলের বাগান। তোমায় ভালোবেসেই তারা রঙিন হয়ে ওঠে আরও।তোমায় যে ভালো না বেসে থাকাই যায় না..
তুমি থাকো আমার আর আমার অন্ধকারের মাঝে শক্ত একটা ঢাল হয়ে। তোমায় কি একবারও ছোঁয়া যায় না? ইচ্ছাকৃত কিংবা কোনো ঠুনকো বাহানায়?..
সত্যি লালন ফকির কি ভেবেই না বলেছিল,
“ পড়শি যদি আমায় ছুঁতো, যম যাতনা সকল যেত দূরে ”
অথচ দেখো, এই তো সেদিন, সেলফোনের ফুরিয়ে আসা চার্জের মতো ঘনিয়ে আসা সন্ধ্যায় কত কাছাকাছি ছিলাম দু'জন, কিন্তু কেউ কারো নয়। এই চেনা শহরে অচেনার মতো দূর থেকে তোমায় শুধু দেখি..
চাইলেও খানিকটা বেশি সময় তোমায় নিজের কাছে আটকে রাখার জেদ করতে পারি না, চোখে চোখ পরলেও ওই মূহুর্তদের বেশিক্ষণ বন্দী করতে পারি না।
তুমিও আর ফিরে চাও না, আমিও হেঁটে চলে যাই নিশ্চুপ। চেনা রাস্তা ফুরিয়ে যায়, বসন্ত এসে ফিরে যায়, বর্ষার অহরহ ঝরা বৃষ্টি থেমে যায়, অভিমানী শরৎশুভ্র মেঘেরাও ভেসে চলে যায় দূরে, বহুদূরে।
অথচ অমলকান্তিদের রোদ্দুর হুওয়ার স্বপ্ন আর সত্যি হয় না।
তবুও আমি রোদ্দুর ঘিরে বেঁচে থাকি রোজ।
“ আর কত অপেক্ষার পর আমার এ পথ তোমার পথে এসে মিলবে?
আর কত ভীড় ঠেলে গেলে, তোমার হাত খানি এসে আমার হাতে মিলবে?
আর কত নির্ঘুম রাত পাড়ি দিলে তোমার বুকে অঘোরে ঘুমের আশ্রয়টুকু মিলবে? ”
আর কত অপেক্ষার পরে?
আর কত?
0 মন্তব্যসমূহ